হাঁপানি/Asthma সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
>শ্বাসনালির ক্রনিক প্রদাহজনিত দীর্ঘস্থায়ী রোগ অ্যাজমা, যা হাঁপানি নামে পরিচিত। এর ফলে শ্বাসনালিতে বিভিন্ন কোষ, বিশেষত ইয়োসিনোফিল ও অন্যান্য কোষীয় উপাদান জমা হয়ে শ্বাসনালি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে।অ্যাজমার কারণে শ্বাসনালির ছিদ্রপসরু হয়ে যায়। ধুলাবালি, ধোঁয়া ইত্যাদির প্রতি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীল হয়। রোগী শ্বাসকষ্টসহ শুকনো কাশি, বুক জ্যাম হওয়া, শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার সময় বুকে শাঁ শাঁ শব্দ হওয়া ইত্যাদি সমস্যায় ভুগতে থাকে।
Health Tips
Fojla Rahman Ziaআপনার হাপানী/অ্যাজমা আছে কি না সেটা বুঝার জন্য নিচের প্রশ্নগুলোর অধিকাংশ যদি হ্যাঁ হয় তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওনঃ
♦ শ্বাসের সময় বুকে বাঁশির মতো শাঁ শাঁ শব্দ হয় কি?♦ রাতে কি তীব্র কাশি হয়?♦ ব্যায়ামের পর কাশি বা শ্বাসকষ্ট হয় কি?♦ বায়ুবাহিত অ্যালার্জেন বা উত্তেজকের সংস্পর্শে কাশি বা শ্বাসকষ্ট অনুভব হয় কি?♦ রোগীর কখনো ঠাণ্ডা লাগলে কি ১০ দিনের বেশি থাকে?♦ রোগীর লক্ষণ কি অ্যাজমার ওষুধে ভালো হয়ে যায়?
কারণঃ
🌍মানুষের শ্বাসনালি সাধারণ ধুলিবালির সংস্পর্শে সরু হয়ে শ্বাসকষ্টের উদ্রেক করে।🌍বংশগত বা জেনেটিকঃযদি মা-বাবার অ্যাজমা থাকে, তবে সন্তানের অ্যাজমা হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।🌍এটপিঃএটপি মানে এ ধরনের রোগীদের রক্তে ইমুন্যুগ্লুুবিউলিন-ই (IgE) নামক অ্যান্টিবডির আধিক্য থাকে। এই রোগীদের অ্যাজমা ও অন্যান্য অ্যালার্জিজনিত রোগ যেমন—একজিমা, রাইনাইটিস বেশি হয়।🌍অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীল শ্বাসনালিঃএ ধরনের শ্বাসনালি খুব সহজেই সংকুচিত হয়ে যায়।🌍লিঙ্গঃসাধারণত শিশু বয়সে ছেলেদের ও প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বেশি অ্যাজমা দেখা যায়।🌍অ্যালার্জেনঃ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অ্যাজমার ঝুঁকি, যেমন পশুর লোম, আরশোলা, রেণু, ছত্রাক ইত্যাদি।উত্তেজকঃ সিগারেটের ধোঁয়া, কারখানার উত্তেজক পদার্থ, ঠাণ্ডা বাতাস, রঙের ঝাঁজালো গন্ধ, মসলা, সুগন্ধি প্রভৃতি। ওষুধঃ অ্যাসপিরিন, ব্যথানাশক, বিটা ব্লকারস, হিরোইন প্রভৃতি।
লক্ষণ:
শ্বাসনালি সংকুচিত হওয়ার ফলে রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়। বুকে চাপ বা জ্যাম লাগা অনুভূত হয়। কাশি বা শুকনো কাশি হয়। শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার সময় বুকে বাঁশির মতো শাঁ শাঁ শব্দ হয়।
প্রকার
এটপিক অ্যাজমা : অ্যাজমা রোগীর এটপি থাকে তাদের এটপিক অ্যাজমা বলে। এ রকম রোগীদের অ্যাজমার কারণ অ্যালার্জিজনিত—অন্যগুলো নন-এটপিক অ্যাজমা। ব্যায়াম প্রভাবিত : ব্যায়ামের সময় যে অ্যাজমার প্রকোপ হয়, তাকে ব্যায়াম প্রভাবিত অ্যাজমা ..এ ছাড়া আছে সিজনাল অ্যাজমা, যা ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে বাড়ে বা কমে।
পরীক্ষাঃ
রোগীর শ্বাসনালিতে শ্বাস গ্রহণে বাধা আছে কি না তা স্পাইরোমেট্রি বা পিক ফ্লো মেট্রি পরীক্ষায় নির্ণয় করা হয়। স্পাইরোমেট্রি দিয়ে অ্যাজমা ও সিওপিডি এই দুটি রোগ পার্থক্য করা যায়। কাশিপ্রধান অ্যাজমার ক্ষেত্রে মেথাকলিন চ্যালেঞ্জ পরীক্ষা করে শ্বাসনালির অতি প্রতিক্রিয়াশীলতা দেখা যায়। রক্তে ও কফে ইয়োসিনোফিল বেড়ে যায়। রক্তে সিরাম ইমুন্যুগ্লুবিউলিন-ই (IgE) অ্যালার্জিজনিত অ্যাজমার জন্য দায়ী
চিকিৎসাঃ
উপশমকারী ওষুধ :যেমন সালবিউটামল। এ ওষুধ তাত্ক্ষণিতকভাবে শ্বাসনালির ছিদ্রপথ প্রসারিত করে শ্বাস-প্রশ্বাসের বাধা কমিয়ে দেয়। যদিও এর কার্যকাল খুবই কম। প্রতিরোধক ওষুধ যেমন স্টেরয়েড, অ্যামাইনোফাইলিন, ক্রোমগ্লাইকেট ইত্যাদি।ইনহেলার পদ্ধতি :এটি সবচেয়ে উপকারী এবং আধুনিক পদ্ধতি।
প্রতিকারঃ
ব্যবহূত বালিশ, তোশক ও মেট্রেসে অচ্ছেদ্য কাভার দিলে ভালো হয়। বিছানার সব কিছু অন্তত সপ্তাহে একবার অধিক তাপে বিশুদ্ধ করা। কার্পেট না রাখলে ভালো। রাখলেও নিয়মিত ট্যানিক এসিডে পরিষ্কার করা। শিশুদের খেলনা নিয়মিত ধুয়ে রাখা। ঘরে কোনো পোষা প্রাণী না রাখা ভালো। রাখলেও নিয়মিত সপ্তাহে অন্তত দুদিন গোসল করানো। বাসায় ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করা ভালো।