Wednesday 19 July 2017

উচ্চরক্তচাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

উচ্চরক্তচাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন...
Hypertension

উচ্চরক্তচাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

>হৃৎপিণ্ড রক্ত সঞ্চালন করার সময় শিরা ও ধমনীর ওপরে যে পরিমাণ চাপ দিয়ে থাকে তাই হচ্ছে রক্তচাপ।স্বাবাভিক রক্তচাপ বলতে বোঝায় সেই বল, যার সাহায্যে রক্ত শরীরের একস্থান থেকে অন্যস্থানে পেঁছায়। হৃৎপিন্ডের পাম্পিং ক্রিয়ার মাধ্যমে রক্তচাপ তৈরি হয়। বিভিন্ন বয়সের সাথে সাথে একেক জন মানুষের শরীরে রক্তচাপের মাত্রা ভিন্ন এবং একই মানুষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে স্বাভাবিক এই রক্তচাপও বিভিন্ন রকম হতে পারে। উত্তেজনা, দুশ্চিন্তা, অধিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের ফলে রক্তচাপ বাড়তে পারে। ঘুমের সময় এবং বিশ্রাম নিলে রক্তচাপ কমে যায়। রক্তচাপের এই পরিবর্তন স্বাভাবিক নিয়মের মধ্যে পড়ে।

Disease

Fojla Rahman Zia

জটিলতা হতে পারেঃ

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত না থাকলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ ৪টি অঙ্গে মারাত্মক ধরনের জটিলতা হতে পারে। যেমন- হৃৎপিন্ড, কিডনি, মস্তিষ্ক ও চোখ;এসব অঙ্গে যেসব সমস্যা হতে পারে, যেমনঃ হার্ট ফেইলিওর, হার্ট এ্যাটাক বা ইনফার্কশন, রেনাল ফেইল্যুর, মস্তিষ্কে স্ট্রোক হতে পারে, যা থেকে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া চোখের রেটিনাতে রক্তক্ষরণ হয়ে অন্ধত্ব বরণ করতে হতে পারে

কি কি কারণে উচ্চ রক্তচাপ হয়ঃ

৯০ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোন নির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না, একে প্রাইমারী বা এসেন্সিয়াল রক্তচাপ বলে। কিছু কিছু বিষয় উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা বাড়ায়, যাহা নিম্নরূপ....বংশানুক্রমিকঃ উচ্চ রক্তচাপের বংশগত ধারাবাহিকতা আছে, যদি বাবা-মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকে তবে সন্তানেরও উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।ধূমপানঃধূমপায়ীদের শরীরে তামাকের নানা রকম বিষাক্ত পদার্থের প্রতিক্রিয়ায় উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে।

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণঃরক্ত চাপও বেড়ে যায়।অধিক ওজন এবং অলস জীবনযাত্রাঃ যথেষ্ঠ পরিমাণে ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরে ওজন বেড়ে যেতে পারে এতে, উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে।অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসঃঅতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, যেমন মাংস, মাখন এবং ডুবা তেলে ভাজা খাবার খেলে ওজন বাড়বে,ডিমের হলুদ অংশ এবং কলিজা, গুর্দা, মগজ এসব খেলে রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়।

রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল এর ফলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।অতিরিক্ত মদ্যপানঃযারা নিয়মিত অত্যাধিক পরিমাণে মদ্যপান করে, তাদের উচ্চ রক্তচাপ বেশী হয়।ডায়াবেটিসঃডায়াবেটিস রোগের ফলে বয়সের সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়।অতিরিক্ত উৎকন্ঠাঃঅতিরিক্ত রাগ, উত্তেজনা, ভীতি এবং মানসিক চাপের কারণেও রক্তচাপ সাময়িকভাবে বেড়ে যেতে পারে। যদি এই মানসিক চাপ অব্যাহত থাকে এবং রোগী ক্রমবর্ধমান মানসিক চাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারেন, তবে এই উচ্চ রক্তচাপ স্থায়ী রূপ নিতে পারে।

কিছু কিছু রোগের কারণে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া গেলে একে বলা হয় সেকেন্ডারী হাইপারটেনশন। এই কারণগুলির মধ্যে কয়েকটি হলো--কিডনির রোগ।অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি ও পিটুইটারী গ্রন্থির টিউমার।ধমনীর বংশগত রোগ।গর্ভধারন অবস্থায় এ্যাকলাম্পসিয়া ও প্রিএ্যাকলাম্পসিয়া হলে।অনেকদিন ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ির ব্যবহার, স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ গ্রহণ এবং ব্যথা নিরামক কিছু কিছু ওষুধ খেলে

উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে কি করা উচিতঃ

অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে: খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। একবার লক্ষ্য অনুযায়ী ওজনে পৌঁছালে সীমিত আহার করা উচিত এবং ব্যায়াম অব্যাহত রাখতে হবে।খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতাঃকম চর্বি ও কম কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন খাশি বা গরুর গোস্ত, কলিজা, মগজ, গিলা, গুর্দা, ডিম কম খেতে হবে। কম তেলে রান্না করা খাবার এবং ননী তোলা দুধ, অসম্পৃক্ত চর্বি যেমন সয়াবিন, ক্যানোলা, ভুট্টার তেল অথবা সূর্য্যমুখীর তেল খাওয়া যাবে। বেশী আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা ভালো। লবণ নিয়ন্ত্রণঃ তরকারিতে প্রয়োজনীয় লবণের বাইরে অতিরিক্ত লবণ পরিহার করতে হবে।মদ্যপানঃঅতিরিক্ত মদ্যপান পরিহার করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়ামঃ সকাল-সন্ধ্যা হাঁটাচলা, সম্ভব হলে দৌঁড়ানো, হালকা ব্যায়াম, লিফটে না চড়ে সিঁড়ি ব্যবহার ইত্যাদি।ধূমপান বর্জনঃধূমপান অবশ্যই বর্জনীয়। ধূমপায়ীর সংস্পর্শ থেকে দুরে থাকুন। তামাক পাতা, জর্দ্দা,গুল লাগানো ইত্যাদিও পরিহার করতে হবে।ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ যাদের ডায়াবেটিস আছে, তা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।মানসিক ও শারীরিক চাপ সামলাতে হবেঃনিয়মিত বিশ্রাম

© Square doc
Share:

0 comments: